I strongly believe that the winning companies of their country will be those who prove with their actions that they can be profitable and increase social value- companies that both do well and do good... Increasingly, shareowners, customers, partners and employees are going to vote with their feet — rewarding those companies that fuel social change through business.

Powered By Blogger

Sunday, June 12, 2022

বাজেট ২০২২-২৩= বিশ্বমন্দা ও মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে আরো সতর্কতা জরুরি

করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে উঠে পুনরুদ্ধারের পথে যাত্রা ঠিকমতো শুরু করতে না করতেই বৈশ্বিক রাজনৈতিক সংকটের কারণে নতুন করে টালমাটাল অবস্থায় পড়ে গেছে গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে। বাজেটে সে কথাটি স্বীকার করা হয়েছে। একদিকে করোনা-পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের চাহিদা পূরণের তাগিদ, অন্যদিকে বৈশ্বিক সংকটের প্রেক্ষাপটে বহি অর্থনীতির সুবিবেচনাভিত্তিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব—এই দুইয়ের মধ্যে ব্যালান্স করার কাজটি সরকার কতটা মুনশিয়ানার সঙ্গে করতে পারবে তার একটি মনস্তাত্ত্বিক দলিল হিসেবে দেখার অপেক্ষায় ছিল দেশবাসী।

সেই অর্থে প্রস্তাবিত বাজেটটি আসলেই বিশেষ পরিস্থিতির বিশেষ একটি নীতি-কৌশল বটে। এই ভাবনার আলোকেই বাজেটের প্রস্তাবনাগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ আগামী কয়েক দিন ধরেই চলবে। তখন হয়তো এর রূপরেখা আরো স্পষ্ট হবে।

মহান সংসদের ভেতরে ও বাইরে সরকারের দিক থেকে আরো ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। অন্য অংশীজনরাও বাজেট প্রস্তাবনার মূল্যায়ন নিজ নিজ জায়গা থেকে করবেন। অনেক অর্থনীতিবিদ এরই মধ্যে অনেক কথাই বলে ফেলেছেন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, বিশেষ পরিস্থিতির বিশেষ চাহিদা মেটানোর সর্বাত্মক চেষ্টা আগামী অর্থবছরে সরকারের আয়-ব্যয়ের পরিকল্পনায় অনেকটাই প্রতিফলিত হয়েছে। এই সদিচ্ছার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে জ্বালানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের পেছনে ভর্তুকির প্রস্তাবনা থেকে। চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় আসন্ন বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয় এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় স্বভাবতই বেড়েছে। তবে এই বৃদ্ধির হার কিন্তু অন্যবারের তুলনায় কম। জিডিপির শতাংশ হিসেবে চলতি বছরের রাজস্ব আয় ৯.৮ শতাংশ থেকে আসন্ন বছরে কমে ৯.৭ শতাংশ হয়েছে। একইভাবে জিডিপির শতাংশ হিসেবে চলতি বছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ৬.২ শতাংশ থেকে কমে ৪.৭ শতাংশ প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক বাস্তবতায় এই কিছুটা সংকোচনমুখী নীতিই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এই সংকোচনের ছাপ জ্বালানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারে দেওয়া সরকারি ভর্তুকির ক্ষেত্রে পড়েনি। চলতি বছরের সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ যে প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা জিডিপির ১.৭ শতাংশ। আসন্ন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই অনুপাত বেড়ে হয়েছে জিডিপির ১.৯ শতাংশ (ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ মোট প্রস্তাবিত বরাদ্দ প্রায় ৮৩ হাজার কোটি টাকা)।

সার্বিক বিচারে বিদ্যমান বাস্তবতায় অনেকটাই গ্রহণযোগ্য মনে হলেও ২০২২-২৩ সালের বাজেট প্রস্তাবনায় কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো সতর্ক পুনর্বিবেচনার দাবি রাখে। প্রথমেই আসে দেশ থেকে পাচার করা টাকা নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে আবার দেশে ফেরত আনার যে প্রস্তাবটি করা হয়েছে সেটি। দেশে ডলারের প্রবাহ বাড়ানোর সদিচ্ছা থেকেই বাজেটপ্রণেতারা এই প্রস্তাবনাটি যুক্ত করেছেন। কিন্তু অসাধু পাচারকারীরা তাদের পাচার করা টাকা দেশে আনার জন্য এই সুযোগ কতটা ব্যবহার করবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। অতীতের অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন দেশের উদাহরণ অন্তত তাই বলে। ফলে অহেতুক পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগের প্রস্তাবটি জনগণের কাছে নৈতিকতার নিরিখে একটি ভুল বার্তাই পৌঁছাবে। দ্বিতীয় যে প্রস্তাবটির কথা জোর দিয়ে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করব সেটি হলো, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট এবং খুচরা বাজারে মোবাইল ফোনের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব। করোনার সময়ই আমরা দেখেছি, বিদ্যমান ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ আমাদের শিক্ষার্থীদের অনলাইন পড়ালেখা কিভাবে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছিল। ইন্টারনেটসেবা ও ডিজিটাল ডিভাইস সব আয়শ্রেণির পরিবারগুলোর কাছে সহজে পৌঁছানোর উপযোগী আর্থিক নীতিই কাম্য। কিন্তু এই প্রস্তাব সে কথাটি বলে না।

তবে ডিজিটাল বাংলাদেশের অভিযাত্রাকে বেগবান করতে বিশেষ সহায়ক হবে এমন একটি বেশ আশাজাগানিয়া প্রস্তাবও রয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। ঝুঁকিপূর্ণ ক্রিপ্টো-কারেন্সির পরিবর্তে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে তাদের নিজস্ব মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ চালু করেছে। এবারের বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকও আসন্ন অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা (সিবিডিসি) চালু করার সম্ভাব্যতা যাচাই করবে বলে জানিয়েছেন। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাতেই হয়।

চলতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি থাকলেও সংশোধিত বাজেটে দেখা যাচ্ছে তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা। আর আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই পরিমাণ আরো ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি করা হয়েছে। সংকট সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষি যে সক্ষমতা প্রদর্শন করে আসছে সেই প্রেক্ষাপটে এ খাতে ভর্তুকি ও প্রণোদনা বৃদ্ধিকে সময়োচিতই বলতে হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এই ভর্তুকি আরো বেশি করা যেত। এ ছাড়া ফল, সবজি প্রক্রিয়াকরণ এবং ডেইরি পণ্য ব্যবসায়ের জন্য যে ১০ বছরের ট্যাক্সব্রেক প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটি দেশের কৃষির বিকাশে বিশেষ সহায়ক হবে।

আসন্ন অর্থবছরে গেল দুটি অর্থবছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য খাতে আরো কার্যকর বাজেট বরাদ্দের প্রত্যাশা ছিল। মোট হিসাবে স্বাস্থ্য খাতের বাজেট বরাদ্দ বাড়লেও আসন্ন অর্থবছরেও কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে মোট বাজেটের সেই ৫.৪ শতাংশই বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই অনুপাত ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে আটকে আছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ অনুপাত আসছে বছরে ৭ থেকে ৮ শতাংশ করে মধ্যম মেয়াদে ১০ শতাংশে উন্নীত করার পক্ষে। ধারণা করা যায়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়টির বরাদ্দ ব্যয়ের সক্ষমতার দিকটি মাথায় রেখেই বাজেটপ্রণেতারা কিছুটা রক্ষণশীল থাকছেন। কিন্তু যেহেতুু দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ে নাগরিকের অংশ ৬৮ শতাংশ, তাই এ খাতে মোট বাজেটের অংশ আসলেই কিভাবে আরো বাড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবার দরকার আছে বলে মনে হয়। এ বছরও জনপ্রশাসনের পর বাজেটের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অংশ (প্রায় ১৫ শতাংশ) বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী করোনাকালে আমাদের শিক্ষার্থীদের যে ‘লার্নিং লস’ হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে যে নানা উদ্যোগের কথা বলেছেন তা অবশ্যই বাস্তবানুগ। তবে এ বছর সম্ভব না হলেও মধ্য মেয়াদে মোট জাতীয় বাজেটে এ খাতের অংশ ২০ শতাংশে উন্নীত করা খুবই জরুরি।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোতে চলতি বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ১৭.৮৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসন্ন অর্থবছরে শতাংশ হিসাবে এই অনুপাত কমে হয়েছে ১৬.৭৫। তবে আমার ধারণা, আসন্ন বছরে এই বরাদ্দ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়বে। কারণ চলতি বছরে এসব কর্মসূচির জন্য বাজেটে যে এক লাখ সাত হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছিল, সংশোধিততে এসে তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়ে এক লাখ ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়েছে। আমার কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চাপ থেকে নাগরিকদের রক্ষার্থে যে ফ্যামিলি কার্ড চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটি। এক কোটি পরিবার প্রাথমিকভাবে এই সুবিধা পাবে। বাজেট প্রণয়ন প্রক্রিয়া এখনো চলমান। সংসদে এবং সংসদের বাইরে আলোচনা চলছে। এই প্রেক্ষাপটে বাজেট চূড়ান্ত করার আগে কিছু প্রস্তাবনা রাখতে চাই—

১. সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ মোট বাজেটের শতাংশ হিসাবে ১৭ শতাংশের কম থেকে বাড়িয়ে ১৯-২০ শতাংশ করার কথা ভাবা যায়। এসব কর্মসূচির উপকারভোগী ও সম্ভাব্য উপকারভোগীদের তথ্য নিয়ে একটি তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। বয়স্কভাতাসহ অনুরূপ ভাতা খানিকটা বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে।

২. স্বাস্থ্য খাতে চলতি বছরের মতোই মোট বাজেটের ৫.৪ শতাংশ রাখা হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশই নাগরিকদের পকেট থেকে আসছে। এই বিবেচনায় এই অনুপাত ৬ থেকে ৭ শতাংশ করার চেষ্টা করা উচিত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন সক্ষমতা বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ নিয়ে এই বরাদ্দ বাড়ানো যেতে পারে।

৩. ইন্টারনেটসেবা ও মোবাইল ফোনসেটের দাম বৃদ্ধির যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেটি নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবা দরকার বলে মনে হয়। এ ক্ষেত্রে নতুন করে বাড়তি ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক।

৪. কৃষি ভর্তুকিতে সাধারণত ১০ হাজার কোটি টাকার আশপাশে বরাদ্দ থাকে। এবার ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও সার-জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কৃষিতে পড়বেই। সে জন্য এই খাতে অন্তত আরো পাঁচ হাজার কোটি টাকার বাড়তি বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।

৫. পদ্মা সেতু চালু হতে যাচ্ছে। এর ওপর ভিত্তি করে দক্ষিণবঙ্গে বিনিয়োগ প্রবাহ বাড়াতে ওই অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার কথা ভাবা উচিত। যেমন—বিভিন্ন স্টার্টআপ তহবিলের একটি অংশ দক্ষিণবঙ্গের উদ্যোক্তাদের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে।

৬. করোনা সংকটের মধ্যেও এনবিআর রাজস্ব আদায়ে দক্ষতা দেখিয়েছে। এই দক্ষতা আরো বাড়াতে তাদের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া বেগবান করতে হবে। পাশাপাশি তাদের মানবশক্তির দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দিকে নীতি-মনোযোগ দিতে হবে।

৭. সর্বজনীন পেনশন স্কিমটি দ্রুতই বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারলে সমাজে খানিকটা হলেও স্বস্তির হাওয়া বইবে।

বাড়তি বরাদ্দের জন্য বাজেট ঘাটতি আরেকটু বাড়ানোতে খুব বেশি ঝুঁকি নেই। স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি বাজেট সহায়ক ঋণ যদি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরো কিছুটা পরিমাণ নেওয়া যায়, এতে বাজেট ঘাটতি প্রস্তাবিত ৫.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ শতাংশ বা তারও কিছুটা বেশি হলেও খুব বেশি ঝুঁকির আশঙ্কা নেই। পাইপলাইনে থাকা সস্তা বিদেশি ঋণ ছাড়ে চলতি অর্থবছরের মতো বাড়তি সক্রিয়তা দেখানোরও সুযোগ রয়েছে। তবে কঠিন শর্তের বাণিজ্যিক ঋণের বিষয়ে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

অস্বীকার করার উপায় নেই যে বিশ্ব অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি এখনো খুবই অনিশ্চিত। তাই সাবধানের মার নেই। বিশ্বব্যাপী যে স্ট্যাগফ্লেশন বা উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধি মিলে যে মন্দা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, তার উত্তাপ আমাদের অর্থনীতিতেও অনুভূত হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার জন্য আমাদের নিজস্ব পণ্য ও সেবার জোগান বাড়াতেই হবে। বাণিজ্য ঘাটতি ও চলতি হিসাবে ঘাটতি মোকাবেলার জন্য আরো উদ্ভাবনীমূলক নীতি বাস্তবায়নের কথা ভাবতেই হবে। নিশ্চয়ই এ বছরও প্রবৃদ্ধি চাই। তবে তার চেয়েও বেশি চাই সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা। একই সঙ্গে ‘আয় বুঝে ব্যয়’ করার কৌশলই হতে হবে আসন্ন অর্থবছরে আমাদের মূলনীতি। এ ছাড়া যাঁরা মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির সুফল তুলনামূলক বেশি পাচ্ছেন সেই অতিধনীদের কাছ থেকে প্রত্যক্ষ কর বেশি করে আদায় করে তা সাধারণ মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে হবে। অর্থাৎ একটি রি-ডিস্ট্রিবিউটিভ রাজস্বনীতি আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। এটি অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং। তবে আমার মনে হয়, আমরা সেই চ্যালেঞ্জ নিতে সক্ষম। দেশবাসীকে এই বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে যে আগামী অর্থবছরটি হবে খুবই চ্যালেঞ্জিং, অনিশ্চিত। তাই সংকট মোকাবেলার জন্য অর্থবছরের মাঝপথেও আমাদের নীতি-কৌশল বদলাতে হতে পারে। সে রকম পরিবর্তনের জন্য সব অংশীজনকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। তবে যাঁদের আয় এরই মধ্যে ক্ষয় হয়ে গেছে, অনানুষ্ঠানিক খাতের যাঁরা কাজ হারিয়েছেন তাঁদের পাশে সরকার খাদ্য সহায়তাসহ বাড়তি সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে হাজির থাকবে—এ কথাটি আরো স্পষ্ট করে বলা দরকার।

লেখক : অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ পত্রিকা। ১১ জুন, ২০২২ ০০:০০



No comments:

Post a Comment